নরসিংদীতে লটকান চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে অনেক চাষি। আর্থিক লাভের
কারণে চাষিদের মধ্যে লটকান চাষে উৎসাহের পাশাপাশি প্রতি বছরই এখানে বাড়ছে
বাগানের সংখ্যা। বর্তমানে নরসিংদীর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের লালমাটি এলাকা
থেকে প্রতিদিন শত শত মণ লটকান যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বিদেশেও
যাচ্ছে নরসিংদীর লটকান।
এ বছর ৫৩৮ হেক্টর জমিতে লটকান চাষ করা হয়েছে।
শিবপুর উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর ও বেলাব ১১২ হেক্টর, রায়পুরায় ৩১ হেক্টর ও
মনোহরদী ১০ হেক্টর ও পলাশ উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে লটকানের আবাদ করা হয়েছে।
মৌসুমে এখানে প্রায় ১০ হাজার টন লটকান উৎপাদন হয়।
লটকান উঁচু-সমতল সব
ধরনের জমিতেই জন্মে। আগে গ্রামের কোনো কোনো বাড়িতে কদাচিৎ লটকান গাছ দেখা
যেত। চাহিদার ব্যাপকতা বা জনসমাদৃত তেমন ছিল না বলে কেউ এটিকে
বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের কথা চিন্তা করত না। মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে
প্রচুর ক্যালোরি, খাদ্য ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এ ফলের চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি
পেয়েছে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে ফলের মূল্যও। মাটি ও জাতগুণে লটকানের
মধ্যে টক ও মিষ্টি দুই প্রকারেই পাওয়া যায়। তবে অধিক মিষ্টি ও সামান্য টক
স্বাদের লটকানের চাহিদা বেশি। নরসিংদীর রায়পুরা, শিবপুর, বেলাব ও মনোহরদী
উপজেলার শত শত চাষি বর্তমানে লটকান বিক্রি করে অর্থনৈতিক সাফল্য ফিরিয়ে
আনছেন।
শিবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকানের বাগান রয়েছে। ১৫-২০ বছর
আগেও লটকানের স্বতন্ত্র বাগান ছিল না। তখন অন্যান্য ফলগাছের সঙ্গেই দু'একটি
গাছ লাগানো হতো ।
তাছাড়া শিবপুর ও মরজাল বাজার থেকে প্রতিদিন দেশের
বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ক্রেতারা এসে লটকান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার
উৎপাদিত লটকান স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়েও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন
জেলায় যাচ্ছে। লটকান চাষি কাউছার আহমেদ জানান, লটকান গাছে নারী-পুরুষ
রয়েছে। ফল আসার আগ পর্যন্ত নারী-পুরুষ চিহ্নিত করা দুষ্কর। জয়নগর গ্রামের
লটকান চাষি আবদুস সালাম মিয়া জানান, তাদের বাড়ির আঙিনায় ১২০টি লটকান গাছ
রয়েছে। গত বছর মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার লটকান বিক্রি করেছিলেন তিনি।
নরসিংদীর
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুভাষ চন্দ্র গায়েন বলেন, লটকান
দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বর্তমানে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে
বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে।
উত্তর সমূহ